অদূর ভবিষ্যতে হয়তো সাক্ষাৎকারটি গুম হয়ে যাবে। তাই এটিকে এখানে হুবহু কপিপেস্ট করে রাখার তাড়না বোধ করছি। সাক্ষাৎকারের পর এর সম্পর্কে জিয়া হাসান নামের এক ব্যক্তির বিশ্লেষণও হুবহু কপি করে দিচ্ছি। সাক্ষাৎকারটি ১৮ মার্চ ২০১৬ সালে প্রকাশিত হয়-
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা অবশ্যই জড়িত। তাঁদের যোগসাজশ ছাড়া এ কাণ্ড হতে পারত না। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথমআলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাৎকারে উঠে আসে সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানের পদত্যাগের পটভূমি, ব্যাংক ব্যবস্থাপনার অদক্ষতা ও অনিয়মের চিত্র। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহরাব হাসান ও ফখরুল ইসলাম
প্রথম আলো: রিজার্ভ চুরির ঘটনা জানার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন। ডেপুটি গভর্নরদেরও সরিয়ে দিলেন। খুব ত্বরিত ব্যবস্থা নিলেন বলে মনে হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী: হ্যাঁ। কিন্তু আমি খুব অবাক হয়েছি। আতিউর রহমান সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি একটুও লজ্জিত হননি।
প্রথম আলো: সংবাদ সম্মেলন করেছেন, না ব্যাখ্যা দিয়েছেন?
অর্থমন্ত্রী: ব্যাখ্যা না, সংবাদ সম্মেলনই করেছেন। বাড়িতে করেছেন এবং দুই দফা। একবার পদত্যাগের আগে, আরেকবার পদত্যাগের পর। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি ইনিয়ে-বিনিয়ে অনেক কথা বলেছেন। দুজন ডেপুটি গভর্নরের চাকরি গেছে তাঁর কারণে। বোঝাতে চাইলেন যে তিনি একা দায়ী নন। দুজনের বাইরে আরও কয়েকজনের চাকরি খাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তা আর হয়নি, হবেও না।
প্রথম আলো: নতুন গভর্নর তো নিয়োগ দিলেন। টাকা উদ্ধারে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?
অর্থমন্ত্রী: টাকা আসলে উদ্ধার হবে কি না, আমি নিশ্চিত না। কিছু টাকা পাওয়া গেছে বরং শ্রীলঙ্কার কল্যাণে।
প্রথম আলো: চুরির ঘটনা জানার পর আতিউর রহমান কী করেছিলেন বলে আপনি শুনেছেন?
অর্থমন্ত্রী: কী বলব। তিনি সংকটটির গভীরতাই বুঝতে পারেননি। আমার মনে হয়, তিনি চিন্তাই করতে পারেননি যে এটা একটা বড় ঘটনা। খবর পেয়েও তিনি দেশের বাইরে বাইরে ঘুরেছেন।
প্রথম আলো: দিল্লির বৈঠকে তো আপনারও যাওয়ার কথা ছিল।
অর্থমন্ত্রী: এটা মূলত অরুণ জেটলির (ভারতের অর্থমন্ত্রী) দাওয়াত ছিল। আমাকেও দাওয়াত দিয়েছিলেন তিনি। যাব চিন্তা করেও পরে যাইনি।
প্রথম আলো: আতিউর রহমানের সাফল্যও তো কিছু কম নয়…
অর্থমন্ত্রী: কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তাঁর অবদান প্রায় শূন্য (অলমোস্ট জিরো)। তিনি খালি পৃথিবী ঘুরে বেড়িয়েছেন আর লোকজনকে অনুরোধ করেছেন বক্তৃতা দেওয়ার জন্য তাঁকে সুযোগ দিতে ও দাওয়াত দিতে। এখন বেরোচ্ছে এগুলো।
প্রথম আলো: গ্রিন ব্যাংকিং, কৃষকদের জন্য ১০ টাকার হিসাব খোলার সুযোগ ইত্যাদি তো সাফল্যই।
অর্থমন্ত্রী: এগুলো স্লোগান। তিনি খালি পিআরের (জনসংযোগ) কাজ করেছেন। এসব নিয়ে বাজারে অনেক কথাও আছে।
প্রথম আলো: আতিউর রহমান বলার চেষ্টা করেছেন যে বেসিক ব্যাংক, হল-মার্ক কেলেঙ্কারির ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছিলেন।
অর্থমন্ত্রী: না, না। এগুলো ইতিমধ্যে বহুল আলোচিত বিষয়। বেসিক ব্যাংক পুরোনো বিষয়। বেসিক ব্যাংকের ওপর প্রথম নিরীক্ষা প্রতিবেদনটা ভালো ছিল। তারপর তো বাংলাদেশ ব্যাংকই সব ধামাচাপা দিয়ে দিল।
প্রথম আলো: আপনি কিন্তু বলেছিলেন বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন, পরে আর নেননি।
অর্থমন্ত্রী: হ্যাঁ, বলেছিলাম। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এখনো হয়নি। যাই হোক। রাজনৈতিক ব্যাপার-স্যাপার সব আলাপ করা যায় না। তবে ব্যবস্থা ঠিকই নেওয়া হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টা ঠিকভাবে দেখভাল করতে পারেনি। যখন আদালতে যাবে, আদালত ঠিকই সব জানতে চাইবে এবং তখন ওই লোকটার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা হবে।
প্রথম আলো: আর হল-মার্ক?
অর্থমন্ত্রী: হল-মার্ক বিষয়ে মামলা আছে। আমার মনে হয়, আমাদের উকিলরা বিষয়টিতে খুব একটা মনোযোগী নন।
প্রথম আলো: ব্যাংক-ব্যবস্থার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য কী করছেন?
অর্থমন্ত্রী: কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ব্যাপক সংস্কার দরকার। এর ব্যবস্থাপনা অদক্ষ। গভর্নরের কথা যদি বলি, তিনি জনসংযোগেই বেশি ব্যস্ত ছিলেন, ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিচতলায় যে লেনদেন হয়, তার মুনাফার কোনো হিসাব থাকে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের লোকেরা ভাগ করে নিয়ে যান। আতিউর কোনো দিন এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেননি।
প্রথম আলো: ব্যাংক-ব্যবস্থা থেকে যেখানে হাজার কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে, সেখানে ৪-৫ হাজার টাকা তো তেমন কিছুই না।
অর্থমন্ত্রী: দৈনিক যাচ্ছে! বাংলাদেশ ব্যাংক হবে নির্জন জায়গা। আগে তাই দেখেছি। অথচ এখন তা বিরাট বাজার। নিচতলায় বিরাট কামরায় সরাসরি বাণিজ্যিক কার্যক্রম হচ্ছে; যা আগে করত সোনালী ব্যাংক।
প্রথম আলো: এ ব্যাপারে আতিউর রহমানকে কিছু বলেছেন কখনো?
অর্থমন্ত্রী: বহুবার বলেছি যে, তুমি ব্যাংকিংয়ে মনোযোগ দাও। কিছু বললেই তিনি বলতেন, আমি এটা করেছি, ওটা করেছি। দুই দিন আগেও তিনি বলেছেন, প্রায় ২৮ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভের কৃতিত্ব তাঁর। রিজার্ভের কৃতিত্ব মূলত প্রবাসী শ্রমিকদের।
প্রথম আলো: বেশি রিজার্ভকেও তো অনেকে তেমন গুরুত্ব সহকারে দেখেন না।
অর্থমন্ত্রী: না, টাকা থাকলে ভালো হয়। তবে এ থেকে বিনিয়োগ করা গেলে আরও ভালো হতো। সেটা আমরা করতে পারিনি এখনো।
প্রথম আলো: রিজার্ভ ভালো বলেই কি আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার সাহস পেলাম?
অর্থমন্ত্রী: না। রিজার্ভের সঙ্গে পদ্মা সেতুর কোনো সম্পর্ক নেই। রিজার্ভ ভালো থাকলে প্রবাসীদের মনে আস্থা থাকে যে দেশে টাকা আছে। নইলে তাঁরা অন্য দেশেও টাকা হস্তান্তরের পথ বেছে নিতে পারেন।
প্রথম আলো: রিজার্ভ চুরির ঘটনা কি দেশে টাকা পাঠাতে প্রবাসীদের মনে আস্থার সংকট তৈরি করতে পারে?
অর্থমন্ত্রী: সে রকম কিছু হবে না বলে আমার বিশ্বাস। তাঁরা ঠিকই বুঝবেন যে একটু অব্যবস্থাপনা হয়েছে, ধরাও হয়েছে।
প্রথম আলো: রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটেছে ছুটির দিন শুক্রবারে, তাই পদক্ষেপ নিতে দেরি হয়েছে—আতিউর রহমানের এমন ব্যাখ্যাকে কীভাবে দেখবেন?
অর্থমন্ত্রী: সম্পূর্ণ ভুল ব্যাখ্যা। শুক্রবারেও লোক থাকবে না কেন? ফোন ধরা ও তথ্য দেওয়ার জন্য ছুটির দিনেও লোক থাকা উচিত।
প্রথম আলো: আপনার কি মনে হয়, এই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদেরও যোগসাজশ রয়েছে?
অর্থমন্ত্রী: অবশ্যই। শতভাগ জড়িত। স্থানীয়দের ছাড়া এটা হতেই পারে না। ছয়জন লোকের হাতের ছাপ ও বায়োমেট্রিকস ফেডারেল রিজার্ভে আছে। নিয়ম হলো, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়—এভাবে ষষ্ঠ ব্যক্তি পর্যন্ত নির্দিষ্ট প্লেটে হাত রাখার পর লেনদেনের আদেশ কার্যকর হবে।
প্রথম আলো: ঘটনার প্রায় এক মাসেও সরকারের শীর্ষ মহলে না জানানোর কারণ হিসেবে আতিউর রহমান নিজে বিভ্রান্ত (পাজল্ড) হয়ে পড়েছিলেন বলে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
অর্থমন্ত্রী: এটাও ভুল। আমার নিয়োগ করা গভর্নর, অথচ তিনি সব সময়ই বলে এসেছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁকে নিয়োগ দিয়েছেন। এমনকি পদত্যাগপত্রও তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিয়েছেন। এটা তিনি পারেন না। তাঁর পদত্যাগপত্রটিও হয়নি। আমাদের দেশে তো ওইভাবে নিয়মকানুন মানা হয় না, অন্য দেশ হলে তো আমার অনুমতি ছাড়া তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাই করতে পারতেন না।
প্রথম আলো: এটা কি ‘চেইন অব কমান্ড’ সমস্যা?
*আতিউর পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন
*কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তাঁর অবদান প্রায় শূন্য।
*রিজার্ভের কৃতিত্ব তাঁর নয়, প্রবাসী শ্রমিকদের। তিনি কেবল জনসংযোগের কাজ করেছেন
*অর্থ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত নয়
অর্থমন্ত্রী: বটেই। তাঁকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেননি, আমি নিয়োগ দিয়েছি। আমার কাছেই পদত্যাগপত্র দিতে হবে।
প্রথম আলো: সাত বছরে আতিউর কি আপনার পরামর্শ নিয়েছেন?
অর্থমন্ত্রী: নেননি, তবে আমিই পরামর্শ দিয়েছি। মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের একটা ঝামেলা থাকে। এটা ভারতসহ সব দেশেই হয়। আর যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া সবাই মুদ্রানীতি প্রণয়নে হস্তক্ষেপ করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা আছে। সে অনুযায়ী কাজও করেছে সব সময়। মুদ্রানীতি নিয়ে আতিউর যা করেছেন, আমি বরাবরই গ্রহণ করেছি।
প্রথম আলো: এ ক্ষেত্রে কি তাঁকে ক্রেডিট দেবেন?
অর্থমন্ত্রী: ওয়েল। দেব। তবে আমিও একটু বলে নিই। নিজের কথা নিজের বলা উচিত না। বাজেট ব্যবস্থাপনায় গত সাত বছরে আমি যা করেছি, এ ব্যাপারে এই মুহূর্তে আমার চেয়ে বিশেষজ্ঞ দ্বিতীয় ব্যক্তি পৃথিবীতে নেই।
প্রথম আলো: আপনার কথার সূত্র ধরে যদি বলি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান প্রধান কাজ করা থেকে আতিউর অন্য কাজে বেশি মনোযোগী ছিলেন। এতে তো আপনার দায়ও চলে আসে। আপনার নিয়োগ করা গভর্নর…
অর্থমন্ত্রী: যত দূর জানি, আতিউর আর্থিকভাবে সৎ ব্যক্তি। তবে প্রায়ই অভিযোগ করতেন, তিনি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন না। খামোখা! এত বছরে বাংলাদেশ ব্যাংককে মাত্র তিন-চারটা নির্দেশনা দিয়েছি। একবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মিলে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, শেয়ারবাজারে ওভার এক্সপোজার আরও কয়েক বছরের জন্য থাকবে। কিন্তু আতিউর ব্যাংক কোম্পানি আইনে সময়সীমা বেঁধে দিলেন এক বছর। আশ্চর্য কাণ্ড!
প্রথম আলো: ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য প্রাক্-বাজেট আলোচনা তো শুরু করেছেন…
অর্থমন্ত্রী: হ্যাঁ। গতবার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছি। কারণ, এনবিআরের চেয়ারম্যান কোনো কাজ-কাম করেন না।
প্রথম আলো: এখনকার চেয়ারম্যান?
অর্থমন্ত্রী: হ্যাঁ। কিছুই করেন না তিনি। খালি বক্তৃতা দেন। তাঁরও পুরো আচরণ হচ্ছে জনসংযোগ করা। করুক, আপত্তি নেই। কিন্তু নিজের কাজটা তো করতে হবে। এক বছর হয়ে গেছে, অথচ এনবিআরের চেয়ারম্যান জানেনই না যে এনবিআর কীভাবে চলে।
প্রথম আলো: বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া টাকাও যে খরচ হয় না…
অর্থমন্ত্রী: পয়সা আছে, কিন্তু খরচ করতে পারছে না—এটাও একটা সমস্যা। অন্য সব মন্ত্রণালয়ের দোষ রয়েছে এতে।
প্রথম আলো: কারণ কী, অদক্ষতা?
অর্থমন্ত্রী: আমার মনে হয়, গত সাত বছরের অর্জন সবাইকে অলস করে তুলেছে। মনোভাবটা এ রকম—আমরা তো ভালোই করছি। অর্থাৎ, মরিয়া ভাবটা আর নেই।
প্রথম আলো: অনেকে বলেন, দেশের বড় বড় প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির পেছনে দুর্নীতি একটা উদ্দেশ্য। আপনি কী মনে করেন?
অর্থমন্ত্রী: প্রথমত, এগুলোর জন্য অভিজ্ঞতা না থাকায় আমরা যথাযথ অনুমানটি (এস্টিমেট) করতে পারি না। সাধারণভাবে অনুমোদন দিয়ে দিই। দ্বিতীয়ত, আমাদের চরিত্রটা দুষ্ট। বড় প্রকল্প মানেই আমরা বড় দাও মারতে চাই।
প্রথম আলো: প্রতিরোধ করা যায় কীভাবে?
অর্থমন্ত্রী: ডিজিটাইজেশন। মুশকিল হচ্ছে, অনেকেরই ডিজিটাইজেশনের প্রতি বিরোধিতা আছে।
প্রথম আলো: রিজার্ভের অর্থ চুরির বিষয়টি নিয়ে সরকারকে যতটা সোচ্চার হতে দেখা গেছে, ব্যাংক খাত থেকে যে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে অতটা সোচ্চার হতে দেখা যায়নি, কেন?
অর্থমন্ত্রী: আসলে অন্য লুটপাট ধরার বিষয়ে কোনো নির্দেশক (ইনডিকেটর) নেই, যার মাধ্যমে তথ্য পেতে পারি।
প্রথম আলো: রিজার্ভ চুরির ঘটনায় যাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলো, তাঁদের মধ্যে নির্দোষ কেউ আছেন কি না…
অর্থমন্ত্রী: একমাত্র আসলাম আলম নির্দোষ। ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) হলো। সামান্য শাস্তি, কিন্তু বদনাম তো হলো। আমি আগের দিনই আসলামকে ডেকেছিলাম। বলেছি, তোমার ওপর খড়্গ আছে। কিন্তু তোমার কোনো দোষ নেই।
প্রথম আলো: বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজকর্মে সংস্কার আনার কথা বলছিলেন। কে আনবে সংস্কার?
অর্থমন্ত্রী: নতুন গভর্নরকে ইতিমধ্যে বলেছি, তিনি যাতে একটু সময় নিয়ে হলেও একটা পর্যালোচনা করেন। এরপর উদ্যোগ নেব।
প্রথম আলো: বাংলাদেশ ব্যাংকের নিচতলার কাজগুলো কি আগের মতো সোনালী ব্যাংককে দিয়ে দেওয়া উচিত?
অর্থমন্ত্রী: আমি জানি না। তবে ফরাসউদ্দিন তদন্ত কমিটি এ ব্যাপারেও সুপারিশ করবে বলে আমি আশা করি।
প্রথম আলো: এনবিআরের চেয়ারম্যান কাজকর্ম করছেন না, এ দায় কি আপনারও নয়? আপনারই তো সংস্থা এনবিআর।
অর্থমন্ত্রী: তিনি এত বক্তৃতা দেন যে তাঁকে আসলে তথ্যসচিব বানিয়ে দেওয়া উচিত। সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরীর একান্ত সচিব ছিলেন তো, তাঁরই প্রভাব পড়েছে এনবিআর চেয়ারম্যানের ওপর। আর আমার দায়ের কথা কী বলব। তাঁর সঙ্গে আছেন শক্তিশালী আমলা। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, তাঁকে নিয়ে কাজ করা মুশকিল। তিনি রাজনীতিবিদদের সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন।
প্রথম আলো: নতুন গভর্নর সম্পর্কে কিছু বলুন।
অর্থমন্ত্রী: ভালো। তিনি আমার অর্থসচিব ছিলেন। আমি তাঁকে জানি। শিগগির কেন্দ্রীয় ব্যাংক চালানোও তিনি শিখে ফেলবেন।
প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।
অর্থমন্ত্রী: আপনাদেরও ধন্যবাদ।
এবার এই সাক্ষাৎকারের ময়নাতদন্ত করে জিয়া হাসানের দেয়া ফেবু পোষ্টটিও হুবহু টুকে দিচ্ছি-
জিয়া হাসান
অর্থমন্ত্রী আজ প্রথম আলোতে যে সাক্ষাতকার দিয়েছে তার পরে যে কোন সভ্য দেশে তিনি ইম্পিচড হতেন অথবা জেলের ভাত খেতেন অথবা ইনকোইয়ারিতে পরতেন। কিন্ত, এইটা সভ্য দেশ না।
উল্লেখ যোগ্য অংশ যা চোখে পরেছে।
১। “দুজন ডেপুটি গভর্নরের চাকরি গেছে তাঁর কারণে। বোঝাতে চাইলেন যে তিনি একা দায়ী নন। দুজনের বাইরে আরও কয়েকজনের চাকরি খাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তা আর হয়নি, হবেও না।” –
—
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভারনর যিনি এই প্রতিষ্ঠানটা চালিয়েছেন এবং প্রতিষ্ঠানের এবং এই কেলেঙ্কারির ভেতরের খবর জানেন, তিনি আরো কয়েক জনকে অভিযুক্ত করেছিলেন। কিন্তু, অর্থমন্ত্রী সেইটা ঠেকিয়েছেন।
যে কোন সভ্য দেশের তদন্ত , এইটাকে সরাসরি ক্রাইম হিসেবে দেখবে এবং অর্থমন্ত্রীকে বিচার প্রভাবিত করার জন্যে দায়ী করবে।
আরো বোঝা যায়, অর্থমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী চাইলে কারো চাকুরী ঠেকাতে পারেন, বাচাতে পারেন। প্রসেস গুরুত্তপুরন না।
২। “আতিউর রহমান বলার চেষ্টা করেছেন যে বেসিক ব্যাংক, হল-মার্ক কেলেঙ্কারির ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছিলেন।
অর্থমন্ত্রী: না, না। এগুলো ইতিমধ্যে বহুল আলোচিত বিষয়। বেসিক ব্যাংক পুরোনো বিষয়। বেসিক ব্যাংকের ওপর প্রথম নিরীক্ষা প্রতিবেদনটা ভালো ছিল। তারপর তো বাংলাদেশ ব্যাংকই সব ধামাচাপা দিয়ে দিল।”
—
অর্থমন্ত্রী এবং শীর্ষ নেতৃত্ব জানেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বেসিক ব্যাংকের দুর্নীতি ধামাচাপা দিয়েছে কিন্ত কোন ব্যবস্থা নেয় নাই। কোন প্রসেস নাই। সিস্টেম নাই। সব ভাই ভাই বিষয়।
৩। “প্রথম আলো: আপনি কিন্তু বলেছিলেন বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন, পরে আর নেননি।
অর্থমন্ত্রী: হ্যাঁ, বলেছিলাম। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এখনো হয়নি। যাই হোক। রাজনৈতিক ব্যাপার-স্যাপার সব আলাপ করা যায় না।”
—
আর কোন লজ্জা নাই, শেম নাই, লুকানোর কিছু নাই। রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রশ্রয় থাকলে, হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে দিলেও, রাজনৈতিক ব্যাপার বলে ছাড় দিয়ে দেয়া যায়।
৪। “তবে ব্যবস্থা ঠিকই নেওয়া হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিষয়টা ঠিকভাবে দেখভাল করতে পারেনি। যখন আদালতে যাবে, আদালত ঠিকই সব জানতে চাইবে এবং তখন ওই লোকটার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা হবে।”
রাজনৈতিক ব্যাপার-স্যাপার সব আলাপ করা যায় না বলার পরেই উপরের লাইনটা বলা হয়েছে। এইটা বাংলাদেশের সরকারের টিপিকাল ডিফেন্স মেকানিজম। অন্যায়ের পরে, দুদককে দিয়ে দায় মুক্তি। একটা কেস করে, সেই কেস অনন্ত কাল ধরে ঝুলিয়ে দিয়ে, বিষয়টা লোক চক্ষুর আড়াল করে দেয়া। ঠিক তাই ঘটেছে বেসিক ব্যাংকের ঘটনায়।
৬। “দুই দিন আগেও তিনি বলেছেন, প্রায় ২৮ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভের কৃতিত্ব তাঁর। রিজার্ভের কৃতিত্ব মূলত প্রবাসী শ্রমিকদের।”
চেতলে মানুষ যখন গালি দেয় তখন সত্যটা বের হয়ে আসে।
আমরা জানতাম, রিজার্ভের ক্রেডিট সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংকের না। আপনার মুখে স্বীকারোক্তি শুনে প্রিত হইলাম।
৭। “প্রথম আলো: রিজার্ভ ভালো বলেই কি আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার সাহস পেলাম?”
কি অথর্ব স্টুপিড প্রশ্ন।
৮। “একবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মিলে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, শেয়ারবাজারে ওভার এক্সপোজার আরও কয়েক বছরের জন্য থাকবে। কিন্তু আতিউর ব্যাংক কোম্পানি আইনে সময়সীমা বেঁধে দিলেন এক বছর। আশ্চর্য কাণ্ড!”
বাংলাদেশের শেয়ার মার্কেট ক্যালেঙ্কারি নিয়ে, এখনো প্রপার তদন্ত হয় নাই। কিন্তু, মুহিত সাহেবের এই স্বীকারোক্তি ফিউচার কোন তদন্তে হেল্প করবে।
বাংলাদেশের ব্যাংক গুলো শেয়ার মার্কেটে তাদের বাড়তি টাকা বিনিয়োগ করে, নিজেরাই মার্চেন্ট ব্যাংক খুলে ব্যবসা করে শেয়ার মার্কেট বাবলটা সৃষ্টি করেছিল যার বলি হয়েছিল- লক্ষ লক্ষ বিনিয়োগকারি।
এই লাইনে পরিষ্কার স্বীকৃতি আছে- গভারনর সেই ওভার এক্সপজারের ভুল বুঝতে পেরে সেইটা ঠেকাতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, অর্থমন্ত্রী সেই বাবলকে আর ফুলিয়ে আর বড় ফাদ পেতে রাখতে চেয়েছিল।
আগেও পড়েছিলাম কোথাও, আতিয়ার সাহেব সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে এই কাজটা করেছিল। এখন কনফারম হলাম। লোকটার প্রতি কোন রেস্পেক্ট নাই। তবুও এই জায়গায় সাহস দেখানোর জন্যে কৃতজ্ঞতা রেখে দিলাম।
৯। “প্রথম আলো: এখনকার চেয়ারম্যান?
অর্থমন্ত্রী: হ্যাঁ। কিছুই করেন না তিনি। খালি বক্তৃতা দেন। তাঁরও পুরো আচরণ হচ্ছে জনসংযোগ করা। করুক, আপত্তি নেই। কিন্তু নিজের কাজটা তো করতে হবে। এক বছর হয়ে গেছে, অথচ এনবিআরের চেয়ারম্যান জানেনই না যে এনবিআর কীভাবে চলে।”
ম্যানেজমেন্টের পরিভাষায় আমরা একে বলি সাইলো। সাইলো গুলো নিজেরা নিজেদের মধ্যে অপারেট করে। কারো কারো সাথে সংযোগ নাই। আর একজন আরেক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে – কেউ কারো কাছে জবাবদীহি নয়- কার সবার নিজের প্রভু আছে যারা তাকে রক্ষা করে। বাংলাদেশ সরকার যে ঠিক সেই অবস্থায় গ্যাছে, এনবিআরের চেয়ারম্যানকে নিয়ে অর্থমন্ত্রী এই স্বীকারোক্তি তার একটা পরিষ্কার প্রমান।
১০। “প্রথম আলো: রিজার্ভ চুরির ঘটনায় যাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলো, তাঁদের মধ্যে নির্দোষ কেউ আছেন কি না…
অর্থমন্ত্রী: একমাত্র আসলাম আলম নির্দোষ। ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) হলো। সামান্য শাস্তি, কিন্তু বদনাম তো হলো। আমি আগের দিনই আসলামকে ডেকেছিলাম। বলেছি, তোমার ওপর খড়্গ আছে। কিন্তু তোমার কোনো দোষ নেই।”
কোন তদন্ত বাদে অর্থমন্ত্রী পরিষ্কার বলে দিচ্ছেন একমাত্র আসলাম আলম নির্দোষ।
বলার কিছু নাই- এইটা ইম্পিচেবল অপরাধ। এবং এই লোকটিকে রক্ষার করার চেষ্টা করার জন্যে, পুলিশ যে কোন সভ্য দেশে অর্থমন্ত্রীকেই তদন্ত করবে। কি তিনি জানেন, যার জন্যে তিনি বলতে পারেন, আসলাম নির্দোষ বাকিরা অপরাধি ?
১১। এবং এখন তিনি একজনকে নিয়োগ দিয়েছে, কেন্দ্রিক ব্যাংকের প্রধান হিসেবে যাকে তিনি জানেন এবং যার যোগ্যতা হচ্ছে
“আমার অর্থসচিব ছিলেন। আমি তাঁকে জানি।” তার অনুগত এবং
“শিগগির কেন্দ্রীয় ব্যাংক চালানোও তিনি শিখে ফেলবেন”।
বি এফ্রেইড, বি ভেরি ভেরি এফ্রিইড। একজন শিক্ষানুবিশকে দেশের কেন্দ্রিয় ব্যাংকের প্রধান করা হয়েছে, যার সিদ্ধান্তের উপরে আপনার এবং আপনার সন্তানের রুটি রুজি নির্ভর করবে।
পুরো সাক্ষাৎকারে আরেকটা জিনিষ চোখে পড়ে সেইটা হইলো, সাবেক গভারনারের প্রতি অর্থমন্ত্রীর ব্যক্তিগত আক্রোশ। সেই আক্রোশটা যদি না থাকতো তবে এই সত্য কথন জাতির সামনে আসতো না।
এই রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান গুলোকে কিভাবে ভেঙ্গে টুকরো করে ফেলা হয়েছে তার জন্যে এই সাক্ষাতকারের চেয়ে বড় কোন প্রমান লাগেনা।
উপরিউক্ত সাক্ষাৎকারটি প্রথম আলোয় প্রকাশিত হলে অর্থমন্ত্রী বেকায়দায় ফেঁসে যান। ফলে তিনি ১৯ মার্চ সংবাদপত্রে ‘প্রকাশিত সাক্ষাৎকারের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য মনে করিনা’ শীর্ষক একটি প্রতিবাদলিপি পাঠান। সেটি, এবং এই বিষয়ে প্রথম আলোর ভাষ্য টুকে রাখার লোভ সংবরণ করতে পারলাম না-
প্রথম আলোর প্রথম পৃষ্ঠায় গতকাল প্রকাশিত ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা জড়িত’ শীর্ষক সাক্ষাৎকারের বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
গতকাল শুক্রবার সম্পাদক বরাবর পাঠানো লিখিত চিঠিতে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘অতীব দুঃখের সঙ্গে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, আপনার সংবাদপত্রে আজকে প্রকাশিত আমার সাক্ষাৎকারের বক্তব্য আমি একেবারেই গ্রহণযোগ্য মনে করি না। সচরাচর আমার সাক্ষাৎকার যাঁরা নেন তাঁরা জানেন যে, সেই সাক্ষাৎকারের খসড়া আমি দেখে দিই এবং আমার অনুমোদন ব্যতিরেকে তা কখনো প্রকাশিত হয় না।
সর্বজনাব সোহরাব হাসান ও ফখরুল ইসলাম ১৭ মার্চ আমার সঙ্গে অনেকক্ষণ বসে একটি সাক্ষাৎকার নেন। সেখানে সাক্ষাৎকারের বাইরেও নানা বিষয় আলোচিত হয় এবং অনেক বিষয়ে আমি সাবধান করে দেই যে, তা প্রকাশিতব্য নয়। সচরাচর আমার পূর্ব নির্ধারিত কোনো সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হলে তার খসড়াটি সাক্ষাৎকারীরা আমাকে দেখে দিতে প্রদান করেন এবং আমার সম্পাদিত সাক্ষাৎকারই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এই সাক্ষাৎকারে সেই রুটিন প্রতিপালিত হয়নি। এই সাক্ষাৎকারে বিশেষ করে প্রতিভাত হলো যে, বয়সের চাপে আমি এখন সদা সতর্ক থাকতে পারি না।
আপনার কাছে বিনীত অনুরোধ যে, কালকের কাগজে প্রথম পৃষ্ঠায় বড় হরফে জানিয়ে দেবেন যে, এই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা আমার চূড়ান্ত অনুমোদন ছাড়া হয়েছে এবং এর বক্তব্য আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’
প্রথম আলোর বক্তব্য
গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত সাক্ষাৎকারটি দেওয়ার জন্য আমরা মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। সাক্ষাৎকারটি প্রকাশের উদ্দেশ্য ছিল, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির পর অর্থমন্ত্রী তথা সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ এবং ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সার্বিক বিষয়ে পাঠককে জানানো। সাক্ষাৎকার গ্রহণের সময় তিনি যেসব বিষয়ে ‘অফ দ্য রেকর্ড’ কথা বলেছেন কিংবা যেসব বিষয় প্রকাশ করতে নিষেধ করেছেন, সেসব বিষয় আমরা প্রকাশ করিনি।
গত ২১ মাসে দেশের ভেতরে ও বাইরে নেওয়া মাননীয় অর্থমন্ত্রীর পাঁচটি সাক্ষাৎকার প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছে। সেসব সাক্ষাৎকার প্রকাশের আগে তাঁকে খসড়া দেখিয়ে নেওয়ার প্রসঙ্গ ওঠেনি। গত বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎকার নেওয়ার পরও খসড়া দেখানোর বিষয়টি আলোচিত হয়নি। তবে অর্থমন্ত্রীর পাঠানো ব্যাখ্যা আজ হুবহু প্রকাশ করা হলো।
জনাব আবুল মাল আবদুল মুহিত বহু বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা, কূটনীতিক এবং লেখক। তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে এবং তা সব সময় অটুট থাকবে।
—বার্তা সম্পাদক